skip to content
Sunday, June 16, 2024

skip to content
Homeরাজনীতিঅনিল-কন্যার মুখে 'অগ্নিকন্যা'র প্রশস্তি

অনিল-কন্যার মুখে ‘অগ্নিকন্যা’র প্রশস্তি

Follow Us :

কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: তৃণমূলের মুখপত্র ‘জাগো বাংলা’য় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশস্তি ছাপা হবে, এতে আশ্চর্যের কিছু নেই। কিন্তু জাগো বাংলায় যদি মমতার বন্দনা করেন ‘গণশক্তি’ কাগজের প্রাক্তন সম্পাদকের কন্যা তা হলে আশ্চর্য হওয়ার শতেক কারণ আছে।

এই কন্যার নাম অজন্তা বিশ্বাস। তাঁর পিতার নাম অনিল বিশ্বাস, যিনি শুধু গণশক্তি কাগজের সম্পাদক ছিলেন না, ছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকও। এই রকম একটা বামপন্থী সামরিক শাসনে থেকে ইতিহাসের অধ্যাপিকা অজন্তা যে রোজা লুক্সেমবার্গের বদলে এক প্রায় বস্তিবাসিনীর চরণে ফুল-বেলপাতা চড়িয়েছেন, বঙ্গ রাজনীতিতে তা নিঃসন্দেহে অভূতপূর্ব।
‘বঙ্গরাজনীতিতে নারীশক্তি’ শীর্ষক একটি ধারাবাহিক লেখায় অজন্তা লিখেছেন, ‘একজন রাজনৈতিক নেত্রী হিসেবে নজির গড়েছেন সমগ্র বিশ্বের সম্মুখে নিজের যোগ্যতায়। রাজনৈতিক ইতিহাসে বাঙালি নারী হিসেবে নিজেকেই অন্যতম সেরা প্রমাণিত করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রশস্ত করেছেন নারীদের জয়যাত্রা।’

আরও পড়ুন: অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার বিরুদ্ধে এফআইআর মিজোরাম পুলিশের
অজন্তা এখনও সম্ভবত সিপিএমের সদস্য। সিপিএম সম্পর্কে একটা চালু রসিকতা হল, তাঁরা অচেনা জায়গায় মুদির দোকানে যাওয়ার আগেও খোঁজ নিয়ে দেখেন দোকানদার সিপিএমের লোক কি না। যে-দলের এই রকম একটা ভাবমূর্তি, সেই দলের বাঘে-গরুতে জল খাওয়ানো এক দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতার কন্যার কলমে এই স্বীকৃতি বিস্ময়ের উদ্রেক করে বই কী।
অতঃপর যে অভ্যস্ত সমীকরণটি উঠে আসে তা হল, অজন্তা কি তৃণমূলের পথে পা বাড়িয়েছেন? এখনও পর্যন্ত তেমন কোনও খবর নেই। এই কিস্তিতে অজন্তা লিখেছেন গীতা মুখোপাধ্যায়, পূরবী মুখোপাধ্যায়, কৃষ্ণা বসু, আভা মাইতি ও ফুলরেণু গুহর কথা। অজন্তা সবার সম্পর্কেই প্রচুর ভালো কথা লিখেছেন। কিন্তু ‘সবাই’ আর মমতা এক নন। মমতা সিপিএমের গদি উল্টে দিয়েছেন, চৌত্রিশ বছরের রাজ্যপাট হারানোর ক্ষত্রিয়-জ্বালা এখনও ভুলতে পারেননি বামেরা। সেই মমতা সম্পর্কে অজন্তা লিখছেন, ‘২০০৬ সালে সিঙ্গুরে টাটার কারখানা স্থাপনের বিষয়ে জমি অধিগ্রহণকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ শুরু হয়। সেই গণবিক্ষোভে নেতৃত্বদান করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অনিচ্ছুক কৃষকদের সংগঠিত করে গণ-আন্দোলনের রূপদান করেন জননেত্রী। এই বিষয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক থাকলেও নির্বাচনে মানুষের রায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকেই যায়।’

আরও পড়ুন: চতুর্থ স্তম্ভ: পেগাসাস ডেঞ্জারাস
‘বিতর্ক’ কথাটা উল্লেখ করলেও মমতা যে সিঙ্গুরে ভুল করেছেন, সেটা একবারও বলেননি অজন্তা। তাঁর দল এখনও মনে করে সিঙ্গুরে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ভুল কিছু করেননি। কিন্তু ‘নির্বাচনে মানুষের রায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকেই যায়’ বলে অজন্তা তাঁর নিজের অবস্থানটাও যেন খানিক পরিষ্কার করে দিয়েছেন।
শুধু সিঙ্গুর নয়, অজন্তা লিখছেন, ‘মহিলা নেত্রী হিসেবে মহিলা সংরক্ষণ বিলকে যেমন সমর্থন করেছিলেন, তেমনই মহিলা রেলমন্ত্রী হিসেবে রাজ্য ও দেশের বেশ কিছু শাখায় লেডিজ স্পেশাল ট্রেন চালু করার মতো সময়োপযোগী সিদ্ধান্তও গ্রহণ করেন। সমস্ত বাধা পেরিয়ে সাফল্যের লক্ষ্যে এগিয়েছেন সরকারি কর্মসূচিগুলির ভিন্নধর্মী রূপায়ণের মাধমে।’

আরও পড়ুন: মমতার উন্নয়নেই ভরসা রাখছেন বাম জমানার মন্ত্রী গৌতম দেব
গীতা মুখোপাধ্যায়, ফুলরেণু গুহদের কথা লেখার পর অজন্তা লিখছেন, ‘রাজনীতির লড়াইয়ে এই সকল নারীর অবদান অপরিসীম। সকলেই স্ব স্ব ক্ষেত্রে স্ব স্ব ভূমিকায় সমুজ্জ্বল। তবে মহিলা নেত্রী হিসেবে রাজনীতির অসম লড়াইয়ে নিজেকে প্রমাণ করেছেন যে নেত্রী তিনি হলেন পশ্চিমবঙ্গের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’
‘মাননীয়া’ শব্দটি বঙ্গীয় বাম ও বিজেপি ব্যঙ্গার্থে ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু অজন্তা সেই পাথর সরিয়ে দিয়েছেন। হয়তো যে-কথাটা ‘আজি হতে শতবর্ষ পরে’ সিপিএম বলত, সে-কথাটা আজই সাহস করে বলে ফেলেছেন অজন্তা। মেয়ের এই বেয়াড়া কাণ্ড-কারখানা দেখে অনিল শেষমেশ রুদ্র অনলে পরিণত হতেন কি না, তা আর দেখা হল না।

RELATED ARTICLES

Most Popular